বৃহস্পতিবার , এপ্রিল ২৪ ২০২৫
chandika hathurusingha

প্রাণনাশের শঙ্কা নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন হাথুরুসিংহে

বাংলাদেশ অধ্যায়ের শুরু থেকেই নানা কারণে আলোচনায় ছিলেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তবে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগটা ওঠে ২০২৩ ভারত বিশ্বকাপে। ব্যর্থতায় ভরা বিশ্বকাপে নাসুম আহমেদকে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল হেড কোচের বিরুদ্ধে। যা গণমাধ্যমে প্রকাশ হতেই ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন লঙ্কান এই কোচ। যদিও পরে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিসিবির দায়িত্বে আসেন ফারুক আহমেদ। এরপরই ছাঁটাই করা হয় লঙ্কান এই কোচকে। সে সময় বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছিলেন, ‘একজন জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে আপনি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে পারেন না। সে কারণে যে শাস্তি পেতে হয়, সেটাই হচ্ছে (ছাঁটাই)। এটা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। এখন হয়েছে, আমি খুশি।’

তবে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার কোড স্পোর্টসের সঙ্গে আলাপকালে ওই ঘটনাকে অস্বীকার করেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সেই সঙ্গে তার ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার অভিযোগ এনে জানিয়েছেন, শেষ সময়ে জীবনের ভয় নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন তিনি।

নাসুমের ঘটনা নিয়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ভাষ্য, ‘আমি কখনোই কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গে ঝগড়া করিনি। নিজের আবেগ কখনো খেলোয়াড়দের সামনে প্রকাশ করিনি। হতাশা থেকে হয়তো আমি ডাস্টবিন ছুড়ে ফেলেছি- যেকোনো কোচের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়ে থাকে; কিন্তু যা হয়েছে, তার থেকে এটা একেবারেই আলাদা। এটা আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।’

বিসিবির বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদের প্রতি অভিযোগও করেছেন হাথুরুসিংহে, ‘জানি না অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত আমি কত সুযোগ মিস করেছি। তারা শুধু আমার চুক্তি বাতিল করার চেষ্টা করেছে। এটা নতুন সভাপতির (ফারুক আহমেদ) পূর্বপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত ছিল।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ওপর নিজের ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ এনে লঙ্কান এই কোচ বলেন, ‘ক্রিকেট আমার সবকিছু। কারণ এটাই আমার ক্যারিয়ার। তারা আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে উল্টো অভিযোগ এনে আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিয়েছে।’

হাথুরুসিংহে দাবি করেন, শেষ সময়ে অনেকটা প্রাণভয় নিয়েই বাংলাদেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন তিনি। সাধারণ অবস্থায় বাংলাদেশে নিরাপত্তার জন্য একজন গানম্যান থাকলেও শেষ সময়ে তাও পাননি। এমনকি বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর মতো গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কাও ছিল লঙ্কান এই হেডকোচের।

হাথুরুর ভাষ্য, ‘আমার উদ্দেশে বাংলাদেশের সিইওর (নিজাম উদ্দিন চৌধুরী) শেষ কথাটি ছিল, আমার চলে যাওয়া উচিত। এ ব্যাপারে বোর্ডের কাউকে কিছু বলার দরকার নেই। ‘আপনার কাছে কি (বিমানের) টিকিট আছে?’ এটা আমার কাছে একটা সতর্কীকরণ সংকেত মনে হলো। তখনই আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম।’

দেশত্যাগের সময়কার কথা উল্লেখ করে এই কোচ বলেন, ‘আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। কারণ, আমাকে বাংলাদেশ থেকে বের হতে হবে। আমার এক বন্ধু আমাকে বিমানবন্দরে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমি একটি টুপি ও হুডি পরে ছিলাম, কোনো ধরনের সুরক্ষা ছিল না। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের মধ্যরাতের ফ্লাইটে আমি বাংলাদেশ ছেড়েছিলাম।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *