ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, এবার নতুন কিছু করে দেখাতে চান তারা। কিন্তু ম্যাচে দেখা গেল, নতুন বোতলে সেই পুরোনো বাংলাদেশকেই। ঘরের মাঠে কাণ্ডজ্ঞানহীন আর হতশ্রী ব্যাটিং উপহার দিয়ে প্রথম দিনেই গুটিয়ে গেছে শান্তরা। শেষ বিকেলে বোলিংয়েও গতির ঝলক দেখাতে পারেনি নাহিদ-খালেদ-হাসান মাহমুদরা। এতে যেন ২০২১ সাল থেকে টেস্ট জিততে না পারা জিম্বাবুয়েকেই দেখাল জয়ের আশা।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দিন শেষ করতে পারেনি বাংলাদেশ। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় গুটিয়ে গেছে মোটে ১৯১ রানেই। জবাব দিতে শেষ বিকেলে আলোকস্বল্পতায় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে ১৪.১ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৭ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে জিম্বাবুয়ের জন্য এটা ওপেনিং জুটিতে ৬ষ্ঠ সর্বোচ্চ রান। প্রথম দিনের খেলা শেষে জিম্বাবুয়ে এখনো পিছিয়ে আছে ১২৪ রানে।
যে পিচে রান তুলতে বাংলাদেশের ব্যাটাররা হিমশিম খেয়েছেন পুরোটা দিন, শেষ বিকেলে সেখানেই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট চালিয়ে বোলারদের শাসন করেছেন বেনেট। ৬ চারের সাহায্যে ৩৭ বলে ৪০ রান তার। বেন কারেন অবশ্য টেস্টই খেলেছেন। ৪৯ বলে করেছেন ১৭ রান। বাংলাদেশ অধিনায়ক চার বোলার ব্যবহার করেও পাননি উইকেটের দেখা।
এর আগে দিনের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে লাঞ্চের আগেই দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। নিয়াগুচির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন দুই ওপেনার সাদমান এবং জয়। সাদমান ফিরেছেন ১২ রান করে আর জয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ১৪ রান।
এরপর আশা দেখাচ্ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুমিনুল হক। এই দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৬৬ রানের জুটি। বাংলাদেশের ইনিংসটাকে ১৯১ পর্যন্ত টেনে নেওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান এই জুটিরই।
লাঞ্চের পর অবশ্য এত সুসময়ই থাকেনি। দলীয় ৯৮ রানে ফেরেন অধিনায়ক শান্ত। ব্লেসিং মুজারাবানির দিনের প্রথম শিকার তিনি। মুশফিককে নিয়ে মুমিনুল পরের উইকেটে যোগ করেন আরও ২৫ রান। তবে সেখান থেকেই শুরু হয় বিপর্যয়ের। ১২৩ থেকে ১৩৭ রানে যেতেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুমিনুল ৫৬ রান করলেও মুশফিক করেন মোটে ৪ রান। আর মিরাজ আউট হন ১ রান করে।
দলীয় ১৪৬ রানে তাইজুল ইসলাম ফিরে গেলে বড় স্কোরের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাইয় বাংলাদেশের। তবু ৮ম উইকেটে হাসান মাহমুদকে নিয়ে ৪১ রানের জুটি গড়েন জাকের আলী অনিক। তবে সেটা বাংলাদেশকে নিতে পারেনি দুইশ পর্যন্ত। ওয়েসলি মাধেভেরে এবং মুজারাবানি মিলে বাংলাদেশকে আটকে দেন ১৯১ রানেই।
১৯১ রানের এই সংগ্রহ ফিরিয়ে এনেছে বিব্রতকর রেকর্ডও। সবশেষ ২০০১ সালে এমন এক দিন দেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ঢাকায় সেদিন বাংলাদেশ অলআউট হয় ১০৭ রানে। এরপর আর কখনোই দেশের মাটিতে রোডেশিয়ানদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে অন্তত ২০০ এর নিচে অলআউট হয়নি টাইগাররা। সেটা হলো একেবারে দুই যুগ পর এসে।